বিরিশিরি ভ্রমন ৬ : সাধু যোসেফের ধর্ম পল্লী ও ডাহুপাড়া বনে

birishiri-22
কুমুদিনী হাজং এর সাথে দেখা করার পর এবার আমাদের গন্তব্য রানীখং সাধু যোশেফের গীর্জা। ভারতীয় সীমান্তের কাছে পাহাড়ের চূড়ায় গীর্জা। স্থাপিত ১৯১২ খ্রীঃ। অবাক লাগে এত আগে এ প্রত্যন্ত অঞ্চলে খ্রষ্টান ধর্মপ্রচারকরা গীর্জা স্থাপন করতে চলে এসে ছিলেন।

birishiri-23
বর্তমানে এখানে আধুনিক সব ব্যাবস্থা। ছাত্রাবাস সহ আবাসিক ব্যাবস্থা। নদী থেকে পানি তুলে পানি সেটা পরিষ্কারের বন্দোবস্তও দেখলাম। উপর থেকে নদীর দৃশ্য চমৎকার।
birishiri-24
গীর্জার উপর মনোরম দৃশ্য দেখে মন প্রশান্ত করে ফিরছি। ঢালু রাস্তা দিয়ে নামার সময় তিনজন নান নামছিল। ওদের একজন রিমঝিমের হাত ধরে আগে আগে চলল। এটুকুতেই ওদের সাথে এত খাতির হয়ে গেল যে নিচে নেমে ওদের সাথে চলে যেতে চায়।
birishiri-25
পাহাড়ের উপরে গীর্জা আর নীচে স্কুল। ছাত্র ছাত্রীতে সরগরম স্কুল। এরকম প্রান্তে মিশনারিদের প্রচেষ্টায় গ্রামের সাধারণ মানুষের শিক্ষার সুযোগ অভাবনীয়।

আজকের প্রোগ্রাম সাকসেসফুল। ফেরার পালা। রিক্সাচালক রা প্রস্তাব দিল যে পথে এসেছি সে পথে না ফিরে অন্য পথ দিয়ে ডাহুপাড়া ঘুরে ফিরার। ডাহুপাড়া কোথায়? ডাহুপাড়া একেবারে সীমান্ত সংলগ্ন। এইখানেও রিক্সা সহ নদি পাড় হতে হবে। তার আগে দরকার খাওয়া দাওয়া। সকাল থেকে দৌড়ের উপর। খিদেয় পেট চোঁ চোঁ। বাজারে হোটেলে খাওয়া দাওয়ার পর নদি পার হওয়ার পালা।
birishiri-26
নদী না বলে বালুর চর বলা উচিত। আমারা তো হেটে গেলাম। কিন্তু সেই বালিতে খালি রিক্সা টানতে চালকদের যে অমানুষিক কষ্ট হয়েছে তা বলার নয়। প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টার পর ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে অপর পরে পৌছাতে পারল। তারপরেও কিন্তু ওদের উৎসাহের শেষ নাই।
birishiri-27
ডাহুপাড়াতে আছে বনবিভাগের বন। এরকম বনে সারাদিন ঘুরাফিরা করে কাটানো যায়। নীচে বয়ে চলেছে পানির ছড়া। ছড়ার পাশ দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা হাটা যায়। ছড়ার পাশে কিছুটা সমতল ভুমি। চাষের খেত। তারপরেই বন। সেটা কিন্তু ইন্ডিয়ার মেঘালয়। এত কাছাকাছি আরেকটা দেশ। ভাবতেই কেমন শিহরণ লাগে। সেই বন আরো গভীর। পাহাড় আরো উচুঁ। দুইজন কে দেখলাম দা নিয়ে মেঘালয়ের দিকে যেতে। রিক্সা চালকরা জানাল গাছ চোর। মেঘালয়ের পাহাড়ে গিয়ে গাছ কেটে রেখে আসে। পরে সেগুলো নিয়ে আসে। আমরা থাকতে থাকতেই দেখলাম দুইজনে পাহাড়ে হারিয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর কাধে গাছ নিয়ে এ পাশে চলে এসে গাছ ফেলে আবার বনের ভিতর ঢুকে গেল। এদিকে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। মন না চাইলেও ফিরতে হল। ফেরার পথে আরও কয়েকজন গাছ চোর দেখলাম। এলাকাটা আদিবাসী গারো হাজংদের হলেও একজনও আদিবাসী চোর দেখলামনা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যাপিত জীবন : কন্যার আগমন

যাপিত জীবন: মিছিল শ্লোগান অবশেষে ডিগবাজী অবলোকন

ঝটিকা সফরে বগুড়া