বিরিশিরি ভ্রমন ০১: পরিকল্পনা ও তথ্য সংগ্রহ
হঠাৎ করেই প্রস্তাবটা আসে ইকবালের কাছ থেকে। ইকবাল আমার প্রাক্তন বস বর্তমানের বন্ধু। সেদিন রাতে ফোন করে বলে অনেকদিন বাইরে যাওয়া হয় না। ঢাকা থাকতে থাকতে দম বন্ধ হয়ে আসছে। নেত্রকোনার বিরিশিরি যাব কীনা। বললাম চিন্তা করে দেখি। আসলে আমিও চাচ্ছিলাম পরিবার নিয়ে কোথাও বেরিয়ে আসতে। মুন্নি অনেক দিন ধরে ঘ্যান ঘ্যান করছিল বেড়াতে যাবার জন্য। মুন্নি কে বলে ইকবালকে কনফার্ম করলাম যাবো। প্রক্তন কলিগ মুকুলও শুনে আগ্রহি হয়ে উঠল।
ফাইনাল ডিসিশন হলো পরের শুক্রবার বউ বাচ্চা সহ আমি, বউ বাচ্চা ছাড়া ইকবাল ও মুকুল তিন দিনের জন্য বিরিশিরি যাত্রা করবো। বিরিশিরি সম্পর্কে আগে পত্রিকার মারফত কিছুটা জানা ছিল কবি রফিক আজাদের সুবাদে। উনি সেখানকার উপজাতি শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হিসাবে বেশ কিছু দিন বিরিশিরি ছিলেন। ওখানে কিভাবে যাওয়া যায়, কোথায় কোথায় ঘোরা যায় সেটা জানার জন্য ইকবালের পরামর্শ মত সামহয়ারে পোস্ট দিই। প্রচুর সাড়া পাওয়া যায়। সহৃদয়বান ব্লগার বৃন্দ একদম ডিটেলস দেন। বাংলালিংক বাংলার পথের টিংকু ওখান কার কয়েকজনের মোবাইল নং দেন প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য। ওনাদের সবাইকে কৃতজ্ঞতা।
ইকবালের দায়িত্ব ছিল বিরিশিরির রেষ্ট হাউস বুক করা। কিন্তু সে জানায় ওয়াইসিএমএ ও ডাব্লুওয়াইসিএম দুইটাই বুক , কোন সিট খালি নাই। চিন্তায় পরা গেল। একা হলে কোনো সমস্যা ছিল ন। কিন্তু মহিলা ও বাচ্চা সাথে করে আগে থেকে বুক করা যায়গা না থাকলে সমস্যা। টিংকুর দেয়া নম্বরে স্বপন হাজংকে ফোন করে সাহায্য চাইলে উনি জানায়, ‘চলে আসুন ব্যবস্থা করে দিবো’। আশ্চর্য লাগে সম্পূর্ণ অপরিচিত লোকদের সাহায্য করতে নির্দ্বিধায় রাজী হয়ে গেল!। বললাম, ‘আমাদের জন্য আপনাকে কষ্ট করতে হবে’। স্বপন হাজং বলেন, ‘আপনারা আমাদের এখানে বেড়াতে আসছেন আর এটুকু করবোনা।’
যদিও পরে সরকারি কানেকশনে বিরিশিরি উপজাতিয় শিল্পকলা একাডেমির রেস্ট হাউস ব্যাবস্থা হয়ে যায়। স্বপনকে জানালে বলে সেখানেই সেও আমাদের জন্য থাকার ব্যাবস্থা করতো। মুকুল খবর নিয়ে আসে মহাখালি থেকে সাড়ে সাতটা আর শোয়া আট টায় সরাসরি বিরিশিরি যাওয়ার বাস ছাড়ে। আমরা ঠিক করি শোয়া আট টার বাসে বিরিশিরি রওয়ানা হব।
মন্তব্যসমূহ