যাপিত জীবন: মিছিল শ্লোগান অবশেষে ডিগবাজী অবলোকন
সিগারেটে আয়েশ করে টান দিয়ে ধূয়া ছেড়ে শিবলি উদাস চোখে ধুয়ার বাতাসে মিশে যাওয়া দেখছে। মাত্রই আমরা সিগারেট খাওয়া শিখেছি। একটা সিগারেট কমপক্ষে তিনজন ভাগ করে খাই। শিবলির আর দুইটান পরেই আমার টার্ন। এমন সময় চপল সামনের দিকে আঙ্গুল তুলে বলে উঠল, ‘এইরে বাবুল ভাই’। সাথে সাথে আমরা দ্দ্রুত উঠে অন্য রাস্তা দিয়ে বাবুল ভাইয়ের নাগালের বাইরে চলে গেলাম।
বাবুল ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন এবং ছাত্রমৈত্রীর নেতা। তিনি আমাদের মিছিল মিটিং এ নিয়ে যেতেন। রাজনীতি মিছিল ইত্যাদিতে আমাদের তেমন আগ্রহ না থাকলেও বাবুল ভাইয়ের আগ্রহে প্রথম প্রথম কয়েকটা মিছিলে যেতে হয়েছে। মিছিলের শ্লোগান গুলো ছিল জ্বালাময়ী। এখনও কয়েকটা মনে আছে। যেমন:
কমরেড কমরেড
ভেঙে ফেল ব্যারিকেড।
দিয়েছিতো রক্ত
আরো দিবো রক্ত
রক্তের বন্যায়
ভেসে যাবে অন্যায়।
লড়াই লড়াই লড়াই চাই
লড়াই করে বাঁচতে চাই
এ লড়াই এ জিতবে কারা
কৃষক শ্রমিক সর্বহারা।
মহল্লায় সিগারেট খেতে হত লুকিয়ে। সিনিওরদের সাথে একসাথে খাওয়া তো দূরের কথা দূর দেখে দেখলেই লুকিয়ে ফেলতে হতো। নচেৎ সেটা হতো বেয়াদপী। এই দিক দিয়া ছাত্রমৈত্রী লিবারেল। ছোট বড় সবাই একসাথে সিগারেট খাচ্ছে। আমাদের জন্য সেটা ছিল আনন্দ ও বিষ্ময়ের।
বাবুল ভাই চেষ্টা করছিলেন আমাদের সংগঠনে ভিরাতে। কিন্তু আমরা তখন সবে মাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছি। আমাদের কাছে সেসময় কৃষক শ্রমিকের মুক্তি জন্য মিছিল করার চাইতে দল বেধে আড্ডা দেয়া অনেক আনন্দের। দ্বান্দিক বস্তুবাদ, দুনিয়া কাঁপানো দশ দিন পড়ার চাইতে ন হন্যতে, লা নুই বেঙলি বা হুমায়ুন আহমেদে পড়া অনেক প্রয়োজনীয়। সমস্যাটা হয়েছে বাবুল ভাই মহল্লার বড় ভাই, চক্ষু লজ্জার কারণে সামনা সামনি না করতে পারিনা। সেজন্য তাকে দূর থেকে দেখলেই যাতে সামনে পড়তে না হয় অন্যদিকে দ্রুট হাটা দিতাম। পেছন থেকে ডাকলেও আমরা না শোনার ভান করতাম। নাছোড়বান্দা বাবুল ভাই তারপরো লেগে থাকতেন। এক সময় অবশ্য তিনি হাল ছেড়ে দিলেন। আপদ মুক্ত হয়ে আমরা মহা আনন্দে আড্ডা টাংকি মারা ইত্যাদি চালিয়ে যেতে লাগলাম।
বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ছিলেন জহির উদ্দ্দিন স্বপন। সুদর্শণ, স্মার্ট, সুবক্তা স্বপন ভাই যখন প্রতিক্রিয়াশীলতা, পূঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে এবং সমাজতন্ত্র, প্রগশীলতার পক্ষে তার জ্বালাময়ী ভাষণ দিতেন আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মত তার কথা শুনতাম। মিছিল মিটিং শেষে আমাদের প্রত্যেকের সাথে কুশল বিনিময় করতেন। তিনি হয়ে উঠলেন আমাদের খুবই প্রিয় ও শ্রদ্ধার পাত্র । সকলেই আমারা তার সম্পর্কে উঁচু ধারণা পোষন করতাম। মোটকথা আমরা প্রগতিশীল এই নেতার গুণমুগ্ধ ভক্ত ছিলাম।
বাবুল ভাইয়ের কাছ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার পর বেশ কিছুদিন তার সাথে যোগাযোগ ছিলনা। কিন্তু ওনার খবর যখন পেলাম খানিকটা ধাক্কাটা খেলাম। শুনলাম পূঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধি নানা বুলি কপচানো বাবুল ভাই আমেরিকা প্রবাসি হয়েছেন। পরের ধাক্কাটা আরো জোড়ালো। যেটা আসলো স্বপন ভাইয়ের কাছ থেকে। একদিন অবাক বিষ্ময়ে দেখলাম মহান বিপ্লবি, প্রগতিশীল নেতা কমরেড জহিরউদ্দিন স্বপন চমৎকার ডিগাবাজী দিয়ে বিএনপিতে যোগ দিলেন।
স্বপন ভাইয়ের পালটি খাওয়ার টাইমিংটা ছিল সুপার্ব। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তিনি এমপি ও মন্ত্রী হয়ে গেলেন।
বাবুল ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন এবং ছাত্রমৈত্রীর নেতা। তিনি আমাদের মিছিল মিটিং এ নিয়ে যেতেন। রাজনীতি মিছিল ইত্যাদিতে আমাদের তেমন আগ্রহ না থাকলেও বাবুল ভাইয়ের আগ্রহে প্রথম প্রথম কয়েকটা মিছিলে যেতে হয়েছে। মিছিলের শ্লোগান গুলো ছিল জ্বালাময়ী। এখনও কয়েকটা মনে আছে। যেমন:
কমরেড কমরেড
ভেঙে ফেল ব্যারিকেড।
দিয়েছিতো রক্ত
আরো দিবো রক্ত
রক্তের বন্যায়
ভেসে যাবে অন্যায়।
লড়াই লড়াই লড়াই চাই
লড়াই করে বাঁচতে চাই
এ লড়াই এ জিতবে কারা
কৃষক শ্রমিক সর্বহারা।
মহল্লায় সিগারেট খেতে হত লুকিয়ে। সিনিওরদের সাথে একসাথে খাওয়া তো দূরের কথা দূর দেখে দেখলেই লুকিয়ে ফেলতে হতো। নচেৎ সেটা হতো বেয়াদপী। এই দিক দিয়া ছাত্রমৈত্রী লিবারেল। ছোট বড় সবাই একসাথে সিগারেট খাচ্ছে। আমাদের জন্য সেটা ছিল আনন্দ ও বিষ্ময়ের।
বাবুল ভাই চেষ্টা করছিলেন আমাদের সংগঠনে ভিরাতে। কিন্তু আমরা তখন সবে মাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছি। আমাদের কাছে সেসময় কৃষক শ্রমিকের মুক্তি জন্য মিছিল করার চাইতে দল বেধে আড্ডা দেয়া অনেক আনন্দের। দ্বান্দিক বস্তুবাদ, দুনিয়া কাঁপানো দশ দিন পড়ার চাইতে ন হন্যতে, লা নুই বেঙলি বা হুমায়ুন আহমেদে পড়া অনেক প্রয়োজনীয়। সমস্যাটা হয়েছে বাবুল ভাই মহল্লার বড় ভাই, চক্ষু লজ্জার কারণে সামনা সামনি না করতে পারিনা। সেজন্য তাকে দূর থেকে দেখলেই যাতে সামনে পড়তে না হয় অন্যদিকে দ্রুট হাটা দিতাম। পেছন থেকে ডাকলেও আমরা না শোনার ভান করতাম। নাছোড়বান্দা বাবুল ভাই তারপরো লেগে থাকতেন। এক সময় অবশ্য তিনি হাল ছেড়ে দিলেন। আপদ মুক্ত হয়ে আমরা মহা আনন্দে আড্ডা টাংকি মারা ইত্যাদি চালিয়ে যেতে লাগলাম।
বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ছিলেন জহির উদ্দ্দিন স্বপন। সুদর্শণ, স্মার্ট, সুবক্তা স্বপন ভাই যখন প্রতিক্রিয়াশীলতা, পূঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে এবং সমাজতন্ত্র, প্রগশীলতার পক্ষে তার জ্বালাময়ী ভাষণ দিতেন আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মত তার কথা শুনতাম। মিছিল মিটিং শেষে আমাদের প্রত্যেকের সাথে কুশল বিনিময় করতেন। তিনি হয়ে উঠলেন আমাদের খুবই প্রিয় ও শ্রদ্ধার পাত্র । সকলেই আমারা তার সম্পর্কে উঁচু ধারণা পোষন করতাম। মোটকথা আমরা প্রগতিশীল এই নেতার গুণমুগ্ধ ভক্ত ছিলাম।
বাবুল ভাইয়ের কাছ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার পর বেশ কিছুদিন তার সাথে যোগাযোগ ছিলনা। কিন্তু ওনার খবর যখন পেলাম খানিকটা ধাক্কাটা খেলাম। শুনলাম পূঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধি নানা বুলি কপচানো বাবুল ভাই আমেরিকা প্রবাসি হয়েছেন। পরের ধাক্কাটা আরো জোড়ালো। যেটা আসলো স্বপন ভাইয়ের কাছ থেকে। একদিন অবাক বিষ্ময়ে দেখলাম মহান বিপ্লবি, প্রগতিশীল নেতা কমরেড জহিরউদ্দিন স্বপন চমৎকার ডিগাবাজী দিয়ে বিএনপিতে যোগ দিলেন।
স্বপন ভাইয়ের পালটি খাওয়ার টাইমিংটা ছিল সুপার্ব। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তিনি এমপি ও মন্ত্রী হয়ে গেলেন।
মন্তব্যসমূহ